কক্সবাজারের ঘটনায় ৪ জন গ্রেফতার, ধরাছোঁয়ার বাইরে মূল হোতারা

কক্সবাজারে আসা নারীকে গণধর্ষণের মামলায় আরও তিন আসামিকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশ। এ নিয়ে মামলায় গ্রেপ্তার হলেন চারজন। তাদের মধ্যে একজনকে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। তবে ধর্ষণকাণ্ডের মূলহোতা আশিকুল ইসলাম আশিক, ইসরাফিল হুদা জয় এবং মেহেদি হাসান বাবু এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে।

গ্রেফতাররা হলেন, আবুল কাশেমের ছেলে রেজাউল করিম (২৫), মৃত মুক্তার আহমদের ছেলে মামুনুর রশীদ (২৮) এবং এর মৃত সালেহ আহমেদের ছেলে মেহেদী হাসান (২১)। তারা এজহারভুক্ত আসামী না হলেও ধর্ষণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে জানিয়েছে পুলিশ। এর আগে এজহারনামীয় রিয়জান উদ্দিন ছোটনকে গ্রেফতার করে র‍্যাব। শনিবার রাতভর অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

এই মামলা এর আগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে জিয়া গেস্ট ইন হোটেলের ম্যানেজার রিয়াজ উদ্দিন ছোটনকে। তাকে চার দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। যাদেরকে নতুন করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা হলেন রেজাউল করিম, মামুনুর রশিদ ও মেহিদী হাসান।

রোববার দুপুর ১টার দিকে সাংবাদিক ডেকে মামলার তদন্তের দায়িত্ব পাওয়া ট্যুরিস্ট পুলিশের সম্মেলন কক্ষে মতবিনিময়ের সবার আয়োজন করে। সেখানে এ তিন আসামীকে গ্রেফতারের বিষয়টি জানানো হয়। যদিও রোবার সকালে এজহারনামীয় আসামীসহ ৫জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল জানিয়েছিল পুলিশ।

এসময় উপস্থিত ছিলেন ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ মুসলিম সাংবাদিকদের জানান, ওই নারী আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে গ্রেফতারকৃতদের নাম উল্লেখ করেন। এর পর তাদেরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। একই সাথে মূল আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।এসময় কক্সবাজার টুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার। মো.জিল্লুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, গত বুধবার (২২ ডিসেম্বর) স্বামী-সন্তানকে জিম্মি ও হত্যার ভয় দেখিয়ে এক নারী পর্যটককে দলবেঁধে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠে। অভিযোগ পেয়ে রাত দেড়টার দিকে কক্সবাজারের কলাতলীর ‘জিয়া গেস্ট ইন’ নামে একটি হোটেল থেকে ওই নারীকে উদ্ধার করে র‌্যাব-১৫। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে হোটেলের ব্যবস্থাপক রিয়াজ উদ্দিন ছোটনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত তিনজনের মধ্যে দুইজনকে শনাক্তও করা হয়েছে।

ওই নারীর বরাত দিয়ে র‌্যাব জানায়, গত বুধবার সকালে ঢাকা থেকে স্বামী-সন্তানসহ কক্সবাজার বেড়াতে আসেন ওই নারী। এরপর কক্সবাজার শহরের হলিডে মোড়ের একটি হোটেলে উঠেন। সেখান থেকে বিকেলে সৈকতের লাবণী পয়েন্টে ঘুরতে যান। লাবণী পয়েন্টে অপরিচিত এক যুবকের সঙ্গে ওই নারীর স্বামীর ধাক্কা লাগে। পরে কথা কাটাকাটি হয়।

এরই জেরে সন্ধ্যায় স্টেডিয়াম সংলগ্ন পর্যটন গলফ মাঠের সামনে থেকে কয়েকজন যুবক তার স্বামী ও ৮ মাসের সন্তানকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তুলে নিয়ে যায়। অপর একটি অটোরিকশায় তিন যুবক গৃহবধূকে তুলে নেয়। পরে তারা পর্যটন গলফ মাঠের পেছনে একটি ঝুপড়ি চায়ের দোকানের পেছনে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে।

পরে হোটেলের ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন (সিসিটিভি) ক্যামেরার ফুটেজ দেখে এ ঘটনায় জড়িত দুজনকে আগেই শনাক্ত করার কথা জানায় র‍্যাব। বাহিনীটির ভাষ্য, ওই দুই যুবক হলেন কক্সবাজার শহরের বাহারছড়া এলাকার আশিকুল ইসলাম ও ইসরাফিল হুদা জয়া। আরেকজনের পরিচয় এখনও জানা যায়নি।

পুলিশ জানান, প্রধান আসামি আশিকের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ইয়াবা অস্ত্রসহ ১৭টি মামলা রয়েছে। চার মাস আগে জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন তিনি। এছাড়াও ইস্রাফিল খোদা জয়ের বিরুদ্ধে আছে দুটি মামলা।